,

আইন শৃংখলা রায় প্রশাসনের নির্দেশে বাহুবলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলন স্থগিত

সাঈদ আহমদ ॥ আজ শুক্রবারের বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলন স্থগিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের দুটি পক্ষ বিপরীত মুখী অবস্থানের কারণে উপজেলায় আইন শৃংখলার অবনতির আশংকায় তিনি সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশনা দেন। এ নিয়ে গত দু সপ্তাহ যাবৎ উপজেলায় অত্র সংগঠনের দুটি পক্ষ বিপরীতমুখী অবস্থান করছিল। এমতাবস্থায়ই একটি পক্ষ ৯ জুন উপজেলা সভা কক্ষে সদস্য সচিব নিশিকান্ত গোপ স্বাক্ষরিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আহবান করে নিমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়। এতে অপর পক্ষটি নিশিকান্ত গোপ সদস্য সচিব হওয়াকে অবৈধ ও ভূয়া আখ্যায়িত করে। সংগঠনে বিভক্তির নেপথ্য কারণ ঃ দীর্ঘ ১২ বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের ৮ মে চকহায়দার জিউর আখড়া মাঠে কাউন্সিলের মাধ্যমে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ বাহুবল উপজেলা শাখা কমিটি গঠন করা হয়। সংগঠনের নিয়মানুযায়ী সম-মর্যাদায় ৩ জন সভাপতি ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তারা হলেন রতীন্দ্র চন্দ্র দাস, দোলন চন্দ্র দাস ও নিহার রঞ্জন দেব। আর সম্পাদক নির্বাচিত পংকজ কান্তি গোপ টিটু। কিন্তু বছরের খানেকের মাথায় বাবু পংকজ পদত্যাগ করলে অবশিষ্ট সেশনের জন্য সম্পাদক নির্বাচিত হন বিশিষ্ট সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য। ধীর গতির কার্যক্রমের মধ্যদিয়েই ২০১৬ সালের ৭ মে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। মেয়াদ শেষ হলেও কাউন্সিল করার মত মানসিকতা নেতাদের মধ্যে দেখা যায়নি। পরিশেষে কিছু প্রেরণা নিয়ে ২০১৬ সালের শেষের দিকে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন কমিটি গঠনে মনোনীবেশ করেন নেতারা। ৪টি ইউনিয়ন কমিটি অনুমোদন দেয়া হলেও ৩ ইউনিয়ন কমিটি (পুটিজুরী, সাতকাপন ও মিরপুর) অনুমোদন না দেয়ায় সংগঠনের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। কয়েক মাস কার্যক্রম প্রায় স্থিমিত থাকার পর সংগঠনের অন্যতম সভাপতি নেহার রঞ্জন দেব অতি সংগোপনে উপজেলা কমিটি বাতিল ও আহবায়ক কমিটি গঠনের আহবান জানিয়ে একাই স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পত্র জেলা কমিটির বরাবর প্রেরণ করেন। জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট অহিন্দ্র দত্ত চৌধুরী ও সেক্রেটারী এডভোকেট স্বরাজ রঞ্জন বিশ্বাস আগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল করে একটি আহবায়ক কমিটির নামের তালিকা চিহ্নিত করে উপজেলা শাখায় প্রেরণ করেন। ওই তালিকা থেকে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে আহবায়ক নিহার রঞ্জন দেব ও সদস্য সচিব হন সাংবাদিক অভিজিত ভট্টাচার্য্য। এর মধ্যেই ২ জুন সংগঠনের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ধার্য্য করা হয়। কিন্তু সংগঠনের বিভক্তির সমাধান না করে সম্মেলন করার বিপক্ষে অবস্থান নেয় অনুমোদন প্রত্যাশী পক্ষ। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই তারিখ পিছিয়ে অভ্যন্তরিন সমস্যা সমাধান সাপেক্ষে ৯ জুন করা হয়। কিন্তু সংঠনের অভ্যন্তরিন সমস্যা সমাধান না হওয়ায় ৯ জুনের সম্মেলন করতে তীব্র প্রতিবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ৩ ইউনিয়ন কমিটি সহ উপজেলা কমিটির সিংহভাগ নেতৃবৃন্দ। এমনকি ওইদিন বিক্ষোভ করারও সিদ্ধান্ত নেন তারা। দেখা দেয় আইন শৃংখলা অবনতির আশংকা। এ নিয়ে দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করতে থাকে। ফলে বিষয়টি প্রশাসন গুরুত্বের সাথে আমলে নেন। এদিকে গত ৭ জুন সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য সদস্য সচিব বহাল আছেন এবং কাজ চালিয়ে যাবার লিখিত আদেশ দেন জেলা সভাপতি এডভোকেট অহিন্দ্র দত্ত চৌধুরী। এই লিখিত আদেশ পেয়েই নিশিকান্ত গোপকে সদস্য সচিব ভূয়া আখ্যায়িত ও সম্মেলন স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে সাংবাদিক অভিজিক ভট্টাচার্য্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন সম্মেলন স্থগিত করেন এবং কোন প্রকার মিটিং সমাবেশ করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আইন শৃংখলার অবনতির আশংকায় আমরা তা স্থগিত করে দিয়েছি। বাহুবল মডেল থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন আইন শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে তাদের প্রোগ্রাম স্থগিত করা হয়েছে। আমরা আইন শৃংখলা রায় বদ্ধ পরিকর।


     এই বিভাগের আরো খবর